সম্প্রতি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যাত্রী সুরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়েছে, এবার থেকে নতুন যেসব যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হবে সেখানে ৬ টি এয়ারব্যাগ (Airbag) থাকা বাধ্যতামূলক। ১ লা অক্টোবর, ২০২২ থেকে এই নিয়ম লাগু হবে। দেশী-বিদেশী সমস্ত অটোমোবাইল সংস্থাকেই এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
আর এই সিধান্তের ফলেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ছোট গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। বিশেষ করে মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)। যাদের তৈরি Alto, S-Presso ইত্যাদি গাড়ির খ্যাতি ভারতজুড়ে। এই মুহূর্তে ছোট গাড়িগুলিতে কেবল স্ট্যান্ডার্ড ২ টি এয়ারব্যাগই প্রদান করা হয়। একটি চালকের জন্য, আরেকটি সামনে বসা যাত্রীর জন্য। কিন্তু এই নিয়ম চালু হলে গাড়ির দাম যে তড়তড়িয়ে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাধারণ গ্রাহকদের কাছে তো ব্যয়বহুল হয়ে উঠবেই, এমনকি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির ব্যবসাতে ব্যাপক ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। এই আবহে মারুতির চেয়ারম্যান আরসি ভার্গবের মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশের অটোমোবাইল বাজারে।
কি জানালেন মারুতি সুজুকির চেয়ারম্যান?
এদিন টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এই নিয়ম বলবৎ হলে ছোট গাড়ির দাম বৃদ্ধি পাবেই। ফলস্বরূপ সাধারণ গ্রাহকের নাগালের বাইরে চলে যাবে। এই পলিসির ফলে আমরা ছোট গাড়ির বাজার বন্ধ করতে বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা দরকার তা হল কম দামের গাড়ি যদি বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় তাহলে এটা কি দেশের জন্য ভালো। গাড়ি শিল্প ধীর হয়ে যাবে। অটো সেক্টর কর্মসংস্থান হারাবে।
এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, মার্চ ২০২২ এর হিসেব অনুযায়ী ভারতীয় গাড়ি বাজারে এখনও ৪১.৬৩ শেয়ার রয়েছে মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার। এ থেকে বোঝাই যায় তাদের গাড়ি কতটা জনপ্রিয়, তাদের সেলস নেটওয়ার্ক কতটা বিস্তৃত এবং সর্বোপরি গ্রাহকদের সামর্থের কথা মাথায় রেখে তাদের নতুন গাড়ি লঞ্চ করা
এই নিয়ম লাগু হলে ছোট গাড়ির দাম কতটা বাড়তে পারে?
অতিরিক্ত ৪ টি এয়ারব্যাগ যুক্ত করলে এন্ট্রি-লেভেল বা ছোট গাড়ি যেমন – Alto, S-Presso, Celerio, Ignis ইত্যাদি গাড়ির দাম ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। ভারতে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে বেশি এন্ট্রি-লেভেল গাড়ি Alto। নতুন নিয়মের জেরে এই গাড়ির দাম আকাশচুম্বি হতে পারে বলে মত গাড়ি বিশেষজ্ঞদের।
কিন্তু যাত্রী সুরক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকেও সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকে। ভারতে বর্ধিত সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা দেখে চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি। যাত্রীবাহী গাড়ির পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি Bharat NCAP ক্র্যাশ টেস্টের জন্য সম্মতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এবার থেকে গাড়ির সেফটি রেটিং ভারতেই করা যাবে।